
সম্প্রতি এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুটি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হন ‘অগ্নি’ খ্যাত এ নায়িকা। বর্তমান সমসাময়িক ও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সময় নিউজের সাথে কথা বলেছেন তিনি।
করোনাকালে কেমন আছেন?
মাহিয়া মাহি: আল্লাহর রহমতে আমি বেশ ভালোই আছি। আগে ভয়ে থাকলেও এখন সেই ভয়টা আর নেই। পরিবার নিয়ে বেশ ব্যস্ত রয়েছি। আগে যেমনটা এক জায়গায় থাকতাম, বের হতাম না। এখন আর তা হয় না। ঘোরাঘুরি করছি, বাবা-মা কে সময় দিচ্ছি। ঈদে শ্বশুরবাড়ি ঘুরে আসলাম। সবমিলিয়ে আমার কাছে এই
করোনায় উপলব্ধি কী কী হলো?
মাহিয়া মাহি: করোনায় উপলব্ধি অনেক কিছুই হয়েছে। মনের ভিতর চিন্তা ছিল, মানসিক চাপ ছিল। ভাবতাম আল্লাহ, এই ছোট্ট জীবনে মানুষ কতই না বড়াই করে। করোনা মানুষকে বুঝিয়ে দিয়েছে, আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী যা আছে তাই হলে চলে। জীবন অনেক ছোট, তাই অল্পতেই অর্থাৎ আমাদের যা আছে তাই হলে জীবন পাড়ি দিতে পারি।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে পরপর দুটি ছবি সাইন করলেন।
মাহিয়া মাহি: হুম! একটি ছবি ‘নাবব এলএলবি’ আরেকটি ‘আশীর্বাদ’। দুটি ছবির গল্প ভালো হওয়ায় আমি সাইনিং করি। একটি ছবিতে আমার বিপরীতে শাকিব খান এবং অন্যটিতে রোশান।
প্রথম ছবি ‘ভালোবাসা আজকাল’-এর পর দীর্ঘ সাত বছর গ্যাপ, কিন্তু কেনো?
মাহিয়া মাহি: শাকিব ভাই মেগা স্টার। তার নামেই সিনেমা চলে। তাকে কেন্দ্র করেই সিনেমার গল্প লেখা হতো। আর আমি সব সময় ‘আমি কেন্দ্রিক’ ছিলাম। চেষ্টা করতাম সেই সব গল্পের ছবিতে কাজ করতে যেখানে আমাকে নিয়েই ছবিটা হতো। তাছাড়া আমি সবসময় চাই সিনেমার গল্পে নায়কের চরিত্র যতটা থাকবে ঠিক ততটা আমারও থাকবে। অর্থাৎ চরিত্রের সেক্রিফাইস না করার কারণে আমাদের গ্যাপটা তৈরি হয়েছে। আমি শুরু থেকেই আমার চরিত্র নিয়ে খেয়ালি। কারণ দর্শকরা যেন আমার নামই হলে সিনেমা দেখতে আসেন। অবশ্য সেদিক থেকেও আমি সাকসেস হয়েছি। দর্শকেরা মাহির সিনেমা হলেই হলে দেখতে যান।
শাকিব খান অভিনেতার বাইরে কেমন প্রকৃতির মানুষ?
মাহিয়া মাহি: ‘ভালোবাসা আজকাল’ সিনেমার শুটিং করতে গিয়ে প্রথম দিকে ভয় পেয়েছিলাম। একজন সুপারস্টারের সাথে কাজ করতে গিয়ে কোনো ভুল করলে যদি বকা দেন তিনি, এটা ভেবেই ভয়টা পাই। তবে কাজ যখন শুরু করি তখনই ভুলটা দূর হয়ে যায়। খুবই অসাধারণ একজন মানুষ তিনি। এতবড় একজন সেলিব্রেটি মানুষ যে তার মধ্যে শিশু সুলভ আচরণ যায়নি। আমাদের শুটিং ফাঁকে তিনি প্রচুর দুষ্টামি করত। সেটে কথা খুব কম বলতো, কিন্তু দুষ্টামিতে তাকে আমি একশতে একশো দেব। এক কথায় ফানি একজন মানুষ শাকিব খান। আর তার সহশিল্পীদের তিনি সুন্দর করে বুঝিয়েও দেন তিনি।
নবাব এলএলবি’ সিনেমায় কাজ করতে যাচ্ছেন। সিনেমাটির নাম শুনে বোঝা যায় শাকিবকে কেন্দ্র করেই এর গল্প। তবে এই ছবিতে কেনো?
মাহিয়া মাহি: যদিও বোঝা যাচ্ছে এই গল্প নবাবের ওপর, আই মিন শাকিব ভাইকে ঘিরে। তবুও কাজটি করছি আমি। আমার চরিত্র পছন্দ হয়েছে। তাছাড়া প্রথম ছবির পর অনেকদিন বিরতি ছিল শাকিব-মাহি জুটির। তাই ভাবলাম আমি সিনেমাটির কাজ করি।
ছবি দুটোতে অভিনয়ের প্রস্তুতি কেমন?
মাহিয়া মাহি: করোনার মধ্যে বসে থাকতে থাকতে আমার ওয়েট অনেকটা বেড়ে গিয়েছিলো। সিনেমা দুটিতে কাজের জন্য ওয়েট কমাতে খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। কারণ প্রথমে আমাকে আমার ফিটনেস ঠিক করতে হবে। ইতোমধ্যে অনেকটা ওজন কমিয়েছি। সবমিলিয়ে নিজের নায়িকা ফিটনেস নিয়ে ফিরব পর্দায়।
ওজন কত কেজি বেড়েছে?
মাহিয়া মাহি: আসলে ওভারওয়েট না। কিন্তু মোটা হয়ে গিয়েছিলাম। ঈদের আগে থেকে দৌড়াদৌড়ি করে অনেকটা ওজন কমিয়েছি। এক কথায় পর্দায় আসার জন্য ফিটনেস নিয়ে কাজ করছি। দর্শকরা যেন নায়িকা মাহিকেই দেখতে পায়।
ভিন্ন প্রসঙ্গে আসি, আপনার সংসার ভাঙা নিয়ে মাঝে মাঝে গুঞ্জন ওঠে!
মাহিয়া মাহি: আসলে আমাদের নিয়ে মানুষের আগ্রহ অনেক। মাঝে মধ্যে অপুর সাথে অভিমান করেই ফেসবুকে ছবি দেওয়া হয় না। তখন অনেকেই ভাবে আমাদের মধ্যে কিছু একটা হয়েছে। দেখুন প্রত্যেকটা পরিবারে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মান অভিমান থাকে, আমাদেরও আছে। তখন অভিমান করেই ফেসবুকে ছবি দেই না। আর তখনই সংসার ভাঙার গুঞ্জন নিয়ে মানুষ হাজির হয়। তবে আমরা অনেক সুখে শান্তিতে আছি। আমার শ্বশুর-শাশুড়ি সবসময় খোঁজ খবর নেন।
মাহি নায়িাকার পাশাপাশি একজন ব্যবসায়ীও আপনি। বর্তমানে আপনার ব্যবসার কি অবস্থা?
মাহিয়া মাহি: ‘ভারা’ নামে একটি ফ্যাশন হাউস রয়েছে। স্থানীয় নারী কর্মীরাদের নিয়ে আমার এই প্রতিষ্ঠানটি ঢাকায় চালু করি। এটারই একটা শাখা আমার শাশুড়িকে নিয়ে সিলেটে চালু করলাম। আপাতত অভিনয়ের পাশাপাশি এই প্রতিষ্ঠানে সময় দিচ্ছি। আমার শাশুড়িও আমাকে প্রতিনিয়ত সাপোর্ট করে যাচ্ছে।